Mamata Benarjee : ভবানীপুর উপনির্বাচন দোরগোড়ায়। সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মতো করে প্রচার শুরু করে দিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Benarjee)।
এরই সঙ্গে বির্তক লেগেই আছে উপনির্বাচনের সময় এবং রাজ্যের মুখ্যসচিব ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে। ভবানীপুর উপনির্বাচন মামলায় রায়দান স্থগিত করলো মহামান্য কলকাতা হাই কোর্ট। এই মামলায় রাজ্যের মুখ্যসচিবের সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে জবাবি হলফনামা চেয়েছিল আদালত। আজ কমিশন ঐ বিষয়ে যথাযথ উত্তর দিতে ব্যর্থ হন। এরপরেই কমিশনের ভূমিকা নিয়ে কড়া সমালোচনা করেন ভারপ্রাপ্ত কার্যকরী প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ।
মূল বিতর্ক তৈরি হয় রাজ্যের মুখ্যসচিবের কমিশনকে লেখা একটা চিঠির জন্যই।ভবানীপুরে নির্বাচন না হলে "সাংবিধানিক সঙ্কট" তৈরি হতে পারে,এই মর্মে সুপারিশ করে কমিশনকে চিঠি লেখেন মুখ্যসচিব। ভোট বিজ্ঞপ্তিতে কমিশনও সেই কথা উল্লেখ করেন। এখানেই বিতর্কের সৃষ্টি। এই ব্যাপারে যিনি হাইকোর্টে মামলা করেছেন, তাঁর দাবীদাবী, "শুধুমাত্র একটা নির্দিষ্ট আসনের জন্যই কি এইভাবে সুপারিশ করা যায়?"
বৃহস্পতিবার হলফনামা দিয়ে কমিশনের কাছে হাইকোর্ট জানতে চেয়েছিলো এইভাবে সুপারিশ করা যায় কিনা? শুক্রবারও এই বিষয়টাকেই সামনে রেখে কমিশনকে কিছু প্রশ্ন করে হাইকোর্ট। যার যথাযথ উত্তর আজও দিতে পারেনি কমিশনের আইনজীবী।
প্রথমত মুখ্যসচিবের ভূমিকা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছিল,ঐ ক্ষেত্রে আজ রায়দান স্থগিত করেছেন মহামান্য হাইকোর্ট। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার প্রসঙ্গে কমিশনের কড়া সমালোচনা করেছেন বিচারপতিগণ। হাইকোর্টের মতে, "নির্বাচন করতে কয়েক কোটি টাকা খরচ হয়। অনেক ক্ষেত্রে প্রার্থীরা জিতেও ইস্তফা দেন। ফলে আবার সেক্ষেত্রে উপনির্বাচন হয়। জনগণের টাকাও খরচ হয়। সময় খরচ হয়। এক কথায় বারংবার টোটাল ক্ষতি সমস্ত দিক থেকেই। তাই, এই বিষয়টি নিয়ে মামলা চলবে।"
যদিও মুখ্যসচিবের চিঠি লেখা প্রসঙ্গেও একটু কড়া মনোভাব দেখান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল। তার বক্তব্য, "উপনির্বাচনের জন্য কমিশনকে চিঠি লেখায় মুখ্যসচিবের ভূমিকা কি?" এর যথাযথ উত্তর জানতে চেয়েও পাননি বিচারকরা। এমনকি এও বলেন, ভূমিকা জানার ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও কেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি।
কমিশনের আইনজীবী অনেক কিছু বোঝানোর চেষ্টা করেন।কিন্তু বিচারপতি বিন্দলের বক্তব্য,"অন্য কোনো কিছু বোঝানোর চেষ্টা করবেন না। ১৩ সেপ্টেম্বর মামলা হয়েছিল।এতদিনের পরেও কোনোকিছুই জিজ্ঞাসা করা এবং জানা হয়নি কেন নির্বাচন কমিশনের?" কমিশনের আইনজীবী বলেন, "এক্ষেত্রে মুখ্যসচিবের কোনো সাংবিধানিক ভুল নেই।"
কিন্তু সেক্ষেত্রেও চিঠিতে কেন "সাংবিধানিক সঙ্কট" বলে বর্ণনা করেছেন মুখ্যসচিব। তার জবাব চেয়েও উত্তর পাননি বিচারকরা। কেনই বা শুধুমাত্র একটি কেন্দ্রের নির্বাচনের ক্ষেত্রে বললেন "জরুরি",অথচ অন্য আসনের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয় কেন? এও প্রশ্ন তোলেন! কিন্তু উত্তর দিতে ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন।
অন্যদিকে ভবানীপুরে প্রচারে গিয়ে ক্রমশ বিজেপিকে আক্রমণ করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বিজেপির " বিভাজনের রাজনীতি"র বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সঙ্গে বলেন, "তিনি মানুষের স্বার্থে ও মানুষের জন্যই প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছেন এবং ভবিষ্যতে করবেনও।" ভবানীপুর থেকেই ভারত জয়ের আহ্বান জানিয়েছেন,বলেছেন,"ভি ফর ভবানীপুর। ভি ফর ভারতবর্ষ। ভি ফর ভারতমাতা। ভবানীপুর থেকে ভারতবর্ষ শুরু হয়।’ এই ‘ভবানীপুর-ভারত’-এর ঐক্য মজবুত করতেই ইভিএমের এক নম্বর বোতামে এলাকাবাসীর সমর্থন চেয়েছেন তিনি।
0 মন্তব্যসমূহ