প্রিয় পাঠক এই পোস্টের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন এপ্রিল ফুল দিনটির উৎপত্তি কিভাবে হলো, কত সালে উৎপত্তি হয়েছে, এই দিনটিকে নিয়ে বিভিন্ন দেশের প্রচলিত বিভিন্ন ধরনের কাহিনী।
নীচে দেওয়া হয়েছে এই দিনটির বিষয়ে প্রচলিত বিভিন্ন তথ্য ও কাহিনী।
১.ফ্রান্সে এপ্রিল ফুল দিনটির কাহিনী।
২.প্রাচীন রোমের কাহিনী।
৩.ব্রিটিশ রাজবংশের কাহিনী।
৪.জার্মানিতে এই দিনটির কাহিনী।
১.ফ্রান্সে এপ্রিল ফুল দিনটির কাহিনী
ফ্রান্সেই এপ্রিল ফুল এর উৎপত্তি মনে করা হয় এবং এর পিছনে "ক্যালেন্ডার বদল" থিওরিকেই মান্যতা দেওয়া হয়। এটিই সবচেয়ে প্রচলিত কাহিনি। ১৫৬৪ সালে ফ্রান্সের পোপ গ্রেগর দ্বাদশ সে দেশের ক্যালেন্ডার বদল করে। এর আগে বছর শুরু হত মার্চের শেষ থেকে। কিন্তু ওই বছর সেটি বদল করে নতুন বছর শুরু করা হয় ১ জানুয়ারি থেকে। এই পরিবর্তন অনেকেই মেনে নিতে পারেননি। তাঁরা ২৫ মার্চ থেকে ১ এপ্রিল পর্যন্ত নতুন বছরের সূচনা পালন করতে থাকেন। যাঁরা পরিবর্তনটি মেনে নেন, তাঁদের বোকাও বানাতে থাকেন। তাঁদের পিঠে কাগজের তৈরি মাছ লাগিয়ে দেওয়া হয়। নতুন ক্যালেন্ডারের পক্ষ যাঁরা, তাঁদের ডাকা হত এপ্রিল ফিশ বা এপ্রিলের মাছ বলে। এখান থেকেই এপ্রিল ফুল এর উৎপত্তি। এটিই সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বহুল প্রচলিত তত্ত্ব।
২. প্রাচীন রোমের কাহিনী
প্রাচীন রোমের কাহিনী। রোমান দেবতা প্লুটো যখন তার স্ত্রী পারসিফনকে অপহরণ করে আনেন, তখন পারসিফনের মা সেরিস মেয়েকে খোঁজার অনেক চেষ্টা করেন। কিন্তু পান না। মেয়ে তখন মাটির নীচে। কিন্তু তাঁর মা ‘বোকার মতো’ মাটির উপরে খুঁজতে থাকেন। সেই ‘বোকামি’র কথা ভেবেই নাকি রোমানরা এই দিনটিতে বোকামি দিবস পালন করত। কালক্রমে তা বিশ্বব্যাপী এপ্রিল ফুল নামে পরিচিতি পায়।
৩. ব্রিটিশ রাজবংশের কাহিনী
"ব্রিটিশ রাজবংশের কাহিনী এবং এপ্রিল ফুলের তত্ত্ব" এটিও একটা বহুল প্রচলিত তত্ত্ব। ১৩৮১ সাল থেকে এই দিনটি উদযাপন শুরু হয়। আসলে ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় রিচার্ড এবং বোহেমিয়ার রানী অ্যান বাগদানের ঘোষণা করেন। বাগদানের তারিখ রাখা হয়েছিল ৩২ মার্চ। মানুষ উদযাপন শুরু করেন। পরে, তারা বুঝতে পারেন যে, ক্যালেন্ডারে ৩২ মার্চ কোনও তারিখ নেই। তখন তারা বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, তারা বোকা হয়েছেন। এরপর থেকে এপ্রিল ফুল ডে উদযাপন শুরু হয়।
৪. জার্মানিতে এই দিনটির কাহিনী
এছাড়াও জার্মানিতে ১৫৩০ সালের ১ লা এপ্রিলে একটা মিটিং হবার কথা ছিল। ঐ আলোচনার সম্ভাব্য ফলাফলের কথা ভেবে বহু মানুষ বাজী ধরেন এবং কয়েক হাজার মুদ্রার বাজী ধরা হয়ে গেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে জানা যায় ঐরকম কোনো আলোচনা সভার সম্ভাবনা কিছুই নাই। যা প্রচারিত হয়েছিল তা সম্পূর্ণ ভুল। ফলস্বরূপ সাধারণ মানুষের হাজার হাজার মুদ্রার গচ্চা যায়। সেই বোকা ব'নে যাওয়া থেকেই এপ্রিল ফুলে'র প্রচলন।
এছাড়াও নেদারল্যান্ডস দেশের নিজস্ব তত্ত্ব এবং প্রচলিত কাহিনী এবং ভারতের নিজস্ব প্রচলিত কাহিনী এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার সংস্কৃতিতে ওদের নিজস্ব কাহিনী প্রচলিত রয়েছে।
এই এপ্রিল ফুল দিনটির উৎপত্তি নিয়ে সঠিক কোনো উত্তর না থাকলেও বর্তমানে স্যোশাল মিডিয়ার দৌলতে এই দিনটির ব্যপ্তি অনেক দূর বিস্তৃত। সারাদিন হাজারো পোস্ট, কমেন্টের মাঝে আনন্দও ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মধ্যে। চলতে থাকুক এপ্রিল ফুল এমনি ভাবেই সময়ের স্রোতে।
0 মন্তব্যসমূহ