উদ্ভিদেই স্বাস্থ্যের রহস্য : পাঁচটি গ্রাম্য গাছগাছালির ঔষধি গুণ


 আধুনিক যুগে মানুষ শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে বিশেষ যত্নশীল। সময়ে পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণ এবং সময়মতো ব্যায়াম, জিম করে মানুষ শরীর সুস্থ্য রাখার জন্য। কোনো কারণে সামান্য অসুস্থ হয়ে গেলেও ছুটে যান চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে। বিভিন্ন মেডিসিনে শরীর কিছুদিন পর চাঙ্গা হয়ে ওঠে।

প্রাচীনকালে মানুষের হাতের নাগালে এত ডাক্তার বদ্যি ছিল না। তবুও বহু জটিল রোগ সেসময় সেরে উঠেছে একমাত্র মনোবল এবং প্রাকৃতিক ঔষধির গুণে। বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের আনাচেকানাচে আত্মগোপন করে আছে কত অজানা উদ্ভিদ। যাদের অদ্ভুত ঔষধি গুণ রয়েছে।
আমাদের আজকের আলোচনায় থাকছে এমন পাঁচটি উদ্ভিদের নাম এবং তাদের গুণাবলী।

প্রাচীনকালে বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে গাছগাছালির ব্যবহার হতো না, কিন্তু ব্যবহৃত গাছগাছালি বেশ উপকার দিতো ব্যবহারকারীদের। বর্তমানে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বহু উদ্ভিদের ঔষধি গুণ সামনে এসেছে। বিজ্ঞানীগণ এখনও নানা গবেষণা করে চলেছেন।

১. আদা :

আদা'র রয়েছে বিশেষ ঔষধি ক্ষমতা। আদা-চা সর্দি কিংবা ঠান্ডাতে চমৎকার আরাম দেয়। গলা পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। ঔষধি গুণের পিছনে রয়েছে "জিনজেরল" নামক এক পদার্থ। এতে যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে তা আথ্রাইটিস, প্রদাহ প্রভৃতি রোগ প্রতিরোধে দারুণ কাজ দেয়। ইহা পেটে বায়ুনাশ করে, পেট ফাঁপা কমায়। কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়।

২. নিম :
নিম গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে বাড়ীর উঠোনে থাকে। বৃক্ষ জাতীয় গাছ। ভোরে নিম কাঠিতে দাঁত পরিষ্কার করলে দাঁত সুস্থ এবং সবল থাকে। নিমের কাঁচা কচি পাতা খাওয়া হয় এতে চুলকানি, এলার্জি ইত্যাদি হয় না। ডায়াবেটিস রোগীরা নিম পাতা বেটে ছোট ছোট ট্যাবলেট বানিয়ে সকাল বিকেল খেয়ে থাকেন। চিকেন পক্স হলে পর অসুস্থ ব্যক্তির বিছানায় নিমপাতা রাখা হয়। নিমপাতা মিশ্রিত জলে স্নান করানো হয়। পোকা-মাকড় কামড়ালে ক্ষত স্থানে নিমপাতা ও হলুদ বাটা লাগানো হয়।

৩. তুলসী :
বাংলার ঘরে ঘরে তুলসী দেবীরূপে পূজিত হন। তুলসী গাছ সবার ঘরে থাকেই থাকে। সর্দি, কাশি ঠান্ডাতে দারুণ উপশমের কাজ করে ইহা। চা'য়ে তুলসী পাতা ফেলা হয় এবং সেই চা গলার সমস্যায় আরাম দেয়। ঘিতে তুলসী পাতা ভেজে খেলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ে।

৪. দূর্বা ঘাস :
মাঠে, ঘাটে এই ঘাস জন্মায়। এই গাছের ঔষধি গুণের কথা অনেকে জানেনই না। ইহার রস পান করলে পেট ঠান্ডা থাকে। রক্তক্ষরণ, আঘাতজনিত কেটে যাওয়াতে এই ঘাসের রস লাগানো হয়। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে বলে গবেষণার প্রমাণিত হয়েছে।

৫. হলুদ :
আদা পরিবারের সদস্য। হৃদরোগে, অ্যালজাইমার রোগে এটি উপশম দেয়। আথ্রাইটিসে আরাম দেয়। কাঁচা হলুদ পেট পরিষ্কার করে। ব্যাথা নিরাময় করে। এতে "কারকুমিন" থাকে, এর জন্যই এর এত ঔষধি গুণ রয়েছে।

বাংলার আনাচেকানাচে যে আরোও কতশত ঔষধি গাছগাছালি লুকিয়ে রয়েছে তার কোনো ইয়ত্তা নাই। গবেষকরা প্রতিনিয়ত খুঁজে চলেছেন। এইসমস্ত উদ্ভিদের নিয়মিত ব্যবহার করলে শরীর স্বাভাবিক ভাবেই সুস্থ ও সবল থাকবে। মন সুন্দর থাকবে। জীবন সুন্দর হয়ে উঠবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ